নিজস্ব প্রতিবেদক:নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। বৃহস্পতিবার (২৫ মে) অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি নির্বাচনে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন দুই লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন দুই লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আইভীর পর দ্বিতীয় নারী হিসেবে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হয়েছেন জায়েদা।নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী- তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘স্বশিক্ষিত’ তার বিরুদ্ধে কোনো মামলার তথ্য নেই। হলফনামায় তার আয় দেখানো হয়েছে তিন লাখ ৪৫ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদ হিসাবে নগদ অর্থ দেখিয়েছেন ৩৫ লাখ টাকা।ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা। অনারেবল টেক্সটাইল কম্পোজিট লিমিটেডে শেয়ারমূল্য দেখিয়েছেন দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা। ঘোষিত ফলাফলে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত জায়েদা খাতুনের সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের মা।
মনোনয়নপত্র দাখিল করার আগে জায়েদা খাতুনকে রাজনীতির মাঠে দেখা যায়নি। মূলত ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের ইমেজকে ভিত্তি করেই তিনি রাজনীতিতে আসেন। শুক্রবার রাত ১টা ৩২ মিনিটের দিকে গাজীপুর জেলা পরিষদ ভবনের বঙ্গতাজ মিলনায়তনে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম। ৪৮০ কেন্দ্রের ফলাফলে টেবিলঘড়ি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের মা জায়েদা খাতুন পেয়েছেন দুই লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা খান নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন দুই লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। ১৬ হাজার ১৯৭ ভোট বেশি পেয়ে জায়েদা খাতুন জয়লাভ করেন। ঘোষিত এ ছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী লাঙল প্রতীকে এম এম নিয়াজ উদ্দিন ১৬ হাজার ৩৬২ ভোট, গণফ্রন্টের প্রার্থী মাছ প্রতীকে আতিকুল ইসলাম ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান হাতপাখা প্রতীকে ৪৫ হাজার ৩৫২ ভোট, জাকের পার্টির প্রার্থী গোলাপ ফুল প্রতীকে মো. রাজু আহম্মেদ ৭ হাজার ২০৬ ভোট, ঘোড়া প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. হারুন-অর-রশীদ ২ হাজার ৪২৬ ভোট ও হাতি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম পেয়েছেন ২৩ হাজার ২৬৫ ভোট। এর আগে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ চলে। এরপর শুরু হয় ভোট গণনা। এদিন কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা, মারামারি-হানাহানি বা কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেনি। ভোটাররা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পেরেছেন। ভোটের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ভোটার এবং প্রার্থীরা।এবার গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে অংশ নেন ৩৩৩ জন প্রার্থী। এরমধ্যে মেয়র পদে ৮ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬ জন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৭৯ জন প্রার্থী রয়েছেন।গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৪৭ জন, নারী ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৮ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছে ১৮ জন। তবে জায়েদা খাতুন বলেন আমার নির্বাচনীয় এজেন্ট ছাড়া শুধু জনগনের সকলে দোয়া ও ভালোবাসায় আমি জয়ী হয়েছি। আমি সকলের সাথে নিয়ে গাজীপুর সিটির উন্নয়ন করতে চায়। আপনারা আমার ও আমার ছেলের জন্য সকলে দোয়া করবেন।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ রফিকুল ইসলাম
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত