আবুল হাশেম রাজশাহী ব্যুরোচীফ:ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশ নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে। তাই প্রতিশোধপরায়ণ না হয়ে জামায়াতে ইসলামী এ দেশটাকে নতুন করে গড়তে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র নেতারা।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বেলা ১১টায় রাজশাহীর একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী মহানগর জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক মো. এমাজ উদ্দিন মণ্ডল দলটির পক্ষে এ কথা জানান।
রাজশাহীতে কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের উদ্দেশে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে বিগত সময়ের আন্দোলন সংগ্রাম এবং আগামী দিনের রাজনৈতিক কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য উপ’স্থাপন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির মাওলানা ড. কেরামত আলী দাবি করে বলেন, স্বৈ’রাচারী শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে রাজশাহীতে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১১ নেতাকর্মীর মৃ’ত্যু হয়েছে। শেখ হাসিনার শাসনামলেই সবচেয়ে বেশি জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের জনশক্তি। আমরা কোনো প্রতিবাদ করতে পারিনি। এমন কী কেউ মারা গেলে জানাজার নামাজটাও পড়তে দেওয়া হয়নি। আমাদের লোকজন যে, কান্না করবে সেই স্বা’ধীনতাটুকুও ছিল না। তাই দেশের পটভূমি পরিবর্তন হওয়ার পর রাজনৈতিকভাবে প্রতিশোধ নিলে আমাদেরই বেশি প্রতিশোধ নেওয়া উচিত। কিন্তু জামায়াতে ইসলামী কখনোই প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না।
ড.কেরামত আলী আরও বলেন, জামায়াত প্রতিশোধ নিতে চায় না। ছাত্রজনতার গণঅ’ভ্যুত্থানের বিনিময়ে আমরা দেশ থেকে স্বৈ’রাচার হটাতে পেরেছি। এখন দেশ গড়ার সময়। জামায়াত দেশ গঠনে কাজ করছে।
এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে রাজশাহী মহানগর জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক এমাজ উদ্দিন মণ্ডল বলেন, কোনো নিরাপরাধ মানুষই যেন মামলায় না জড়ায়, আমরা সেদিকে সজাগ দৃ’ষ্টি রাখছি। আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না। কোনো ধরনের অন্যায় ও লুটের সঙ্গে আমাদের নেতাকর্মীদের সর্ম্পক নেই। আগামীতে অনেক কাজ আছে। আমরা জনগণকে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। আমরা নতুন প্রজন্মকে ন্যায় ও সত্য সম্পর্কে জানাতে ও চেনাতে চাই। আমাদের পরিকল্পনাই হচ্ছে- কীভাবে দেশটাকে নতুন করে সাজানো যায়। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবারগুলোকে জামায়াতের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। দেশ গড়তে আর কোনো সহিংসতা চায় না জামায়াত।
এ সময় পুলিশের সমালোচনা করে জামায়াতে ইসলামী নেতারা বলেন, অধিকাংশ মামলা ও নির্যাতনই রাজনৈতিক নেতাদের আদেশে পুলিশের দ্বারা সংঘটিত হয়েছে। পুলিশ তাদের নেতাকর্মীদের অন্যায়ভাবে নির্যাতন করেছে। এরপরও দেশ ও দেশের জনগণের স্বার্থে থানাসহ ক্ষতিগ্র’স্ত সব সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তার কাজ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা। কারণ জামায়াতে ইসলামী নতুন দেশ গড়তে চায়।
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী মহানগর জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও রাজশাহী বার অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আবু মোহাম্মদ সেলিম ও অধ্য’ক্ষ সিদ্দিকুর রহমান সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
এ সময় মহানগর জামায়াতের মিডিয়া ও প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক সারোয়ার জাহান প্রি’ন্স, ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি আব্দুল মোহাইমিন, মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি সিফাত আলমসহ অনেকই উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post