নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রায় পাঁচ মাস আগে গুম হওয়া এক নারীর সন্ধানে ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিদের নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে অনুসন্ধান চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পৌরসভার ২নং সিএন্ডবি বাজারের পশ্চিম পাশে বেড়াইদেরচালা গ্রামে এই অভিযান চালানো হয়। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান র্যাব-১ গাজীপুর ক্যাম্পের সদস্যরা ও শ্রীপুর থানা পুলিশ এ অভিযান চালায়। সেখানে আব্দুল লতিফ নামের এক ব্যক্তির বহুতল ভবনের নীচতলায় ভূগর্ভস্থ সেপটিক ট্যাংকে অনুসন্ধান চালানো হয়। অনুসন্ধানে সেখানে গুম হওয়া নারীর সন্ধান মিলেনি। বেলা পৌনে ২ টার দিকে অভিযান সমাপ্ত হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ বছরের জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময় থেকে মোছা. সুমাইয়া (১৯) নামের এক নারী নিখোঁজ হন। তিনি শ্রীপুরের আউটপেস স্পিনিং কারখানায় চাকরি করতেন। সুমাইয়া কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা থানার আমিরগঞ্জ গ্ৰামের সেলিম মিয়ার মেয়ে ও শ্রীপুরের কাওরাইদ এলাকার মো. হানিফ মিয়ার(৪০) স্ত্রী।
এ ঘটনায় সুমাইয়ার মা তাসলিমা আক্তার বাদি হয়ে গত ২৬ জুলাই শ্রীপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পরে এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে দায়ের মামলায় হানিফ সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই মামলাটি পুলিশের পাশাপাশি র্যাব-১ তদন্ত করছে। র্যাব জানায়, গত ২৭ ডিসেম্বর গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় তাছলিমা আক্তার বাদী হয়ে তার মেয়ে মোছা. সুমাইয়া আক্তারের নিখোঁজ হওয়ায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার কাওরাইদ গ্রামের হানিফ (৪০) ও শেরপুরের নালিতাবাড়ি উপজেলার কাকরকান্দি গ্রামের জহির উদ্দিনের ছেলে মো. জয়নাল আবেদীনের (৩৮) নাম উল্লেখ করে ৩/৪ জনের নাম অজ্ঞাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়। থানায় মামলা দায়েরের পর পুলিশের পাশাপাশি র্যাব-১ পোড়াবাড়ি ক্যাম্প মামলার তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায়ে আসামি জয়নাল আবেদীনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর র্যাব পোড়াবাড়ি ক্যাম্পের সদস্যরা আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। গ্রেপ্তার জয়নাল আবেদীন জানান, সুমাইয়াকে হত্যার পর বেড়াইদেরচালা এলাকায় আব্দুল লতিফের তিনতলা ভবনের পেছনে একটি স্টোর রুমের নিচে দুই স্তরের আরসিসি ঢালাইয়ের নিচে চাপা দিয়ে রেখেছে।
এমন খবরে র্যাব-১ সদস্যরা মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার ওই বাড়ির ছোট স্টোর রুমের মেঝে ভেঙে মরদেহ উদ্ধারের অভিযান চালায়। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন বলেন, গত ২৬ তারিখে নিখোঁজের মা থানায় আসেন। তিনি সুমাইয়ার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সুমাইয়াকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়েছে বলে স্বীকার করেন। মামলার প্রেক্ষিতে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বেড়াইদেরচালা গ্রামে অভিযান চালানো হয়েছে। একটি সেপটিক ট্যাংকির ভেতর অনুসন্ধান চালিয়ে সেখানে কিছুই পাওয়া যায়নি।
এমন খবরে র্যাব-১ এর সদস্যরা মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ওই বাড়ির পছনের অংশের মেঝে ভেঙ্গে মরদেহ উদ্ধারে অভিযান চালায়। কিন্তু খোড়াখুড়ি করার পর নিখোঁজ নারীর মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়নি। মরদেহ মাটি চাপা দেওয়ার খবরে আশপাশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং উৎসুক জনতা ভিড় করে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন পোড়াবাড়ি র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার জুন্নুরাইন বিন আলম।
Discussion about this post