নিজস্ব প্রতিবেদক: গাজীপুরে শতশত লোকের সমাগমে চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব পালিত হয়েছে। বাংলা বছরের শেষ দিন, অর্থাৎ চৈত্র মাসের শেষ দিনকে বলা হয় চৈত্র সংক্রান্তি। হিন্দুশাস্ত্র ও লোকাচার অনুসারে এই দিনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস প্রভৃতি ক্রিয়াকর্মকে পুণ্যময় বলে মনে করা হয়। এক সময় এ অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি উৎসব হতো চৈত্র সংক্রান্তিতে।
একসময় বাংলায় প্রতিটি ঋতুরই সংক্রান্তির দিনটি উৎসবের আমেজে পালন করতো বাঙালি। কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে সে উৎসব।তবে আজো বাঙালি আগলে রেখেছে সংক্রান্তির দুটি উৎসবকে। একটি চৈত্র সংক্রান্তি, অপরটি পৌষ সংক্রান্তি।চৈত্র সংক্রান্তির দিনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের লোকজ পূজার চল ছিল। চৈত্র সংক্রান্তি ও এর আগের কয়েকদিন মিলে পালিত হতো চড়ক পূজা। সন্তান প্রাপ্তি, দূরারোগ্য ব্যাধি থেকে মুক্তি লাভ ও মনের বাসনা পূরণের আশায় পূজা করা হতো। পূজার কয়েকদিন আগে থেকেই ব্রত এবং সংযম পালন করতেন ভক্তরা।
গাজীপুর সদর উপজেলার বাড়িয়া ইউনিয়ন বড় কয়ের শ্মশানঘাট কালী মন্দির নদীর পাড়ে চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে শনিবার শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী কালী পূজা।প্রায় দুইশ’ বছরের ঐতিহ্যের এই উৎসবকে ঘিরে জনসাধারণ বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। তবে সময়ের পরিক্রমায় মেলার জৌলুস আগের চেয়ে কমে গেছে বলে প্রবীণজনরা জানান।
বড় কয়ের গ্রামে পূজা ও মেলাকে কেন্দ্র করে সনাতন ধর্মালম্বীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে।আয়োজন স্থলে নানা ধরণের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানীরা।শুধু কয়ের গ্রাম নয়, আশপাশের অনেক এলাকা থেকেও ভক্ত-পূন্যার্থীরা আসেন এই পূজা উৎপাদন করতে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্নভাবে পূজা অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে উদযাপন কমিটি ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে সব ধরনের ব্যবস্থা।
মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি গৌতম চন্দ্র দাস বলেন মেলার জৌলুস আগের চেয়ে কমে গেছে। তিনি বলেন কালী মন্দিরের এই স্থানটিতে এক সময় ১০ ফিট গভীর ছিল, কিছুই ছিলনা এখানে ভক্তদের অসুবিধা হত পূজা উৎযাপনে, আস্তে আস্তে টিনের আটচালা থেকে এখন পাকা হয়েছে বটে তবে সেই জৌলুস নেই।এখন অনেক কিছুই শুধু স্মৃতি বলে তিনি জানান।প্রতি বছরের মত এবারও আমরা চেষ্টা করেছি ঐতিহ্য ধরে রাখতে। আজ শত শত লোক এখানে উপস্তিত হয়েছে এতে আমরা অনেক খুশি, তিনি আরও বলেন প্রতিবারের মতো এবারও শান্তিপূর্ন ভাবে পূজা উৎযাপিত হয়েছে।চৈত্র সংক্রান্তির পূজা ও পাঠা বলির আয়োজন পরিচালনা করেন পুরোহিত সজল চক্রবর্তী ও রবি চক্রবর্তী।
উপস্থিত ছিলেন,কালী মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ দাস,বড় কয়ের দুর্গা মন্দিরে সভাপতি রঞ্জন কুমার দাস (টিটু),সাব-ইন্সপেক্টর অমিতাভ দাস অপু,কালী মন্দির কেশিয়ার বিকাশ দাস,ভূমি কর্মকর্তা তপন দাস,পূবাইল আদর্শ ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক শ্যামল চন্দ্র দাস প্রমুখ
Discussion about this post