ফাহিম ফরহাদ,বিশেষ প্রতিনিধি: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন দাবীতে মানববন্ধন করেছে ভূক্তভূগী অনউত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা। ২০১৮-১৯ সেশনের ভূক্তভূগী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বৃহস্পতিবার (২জানুয়ারি) দিনব্যাপী দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আগত শিক্ষার্থীরা নানা প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের মূল ফটকের সামনে। পরে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. নুরুল ইসলাম বরাবর বিভিন্ন দাবী সংবলিত দুই পৃষ্ঠার স্বারকলিপি প্রদান করতে গেলে বাঁধার সম্মূখিন হন শিক্ষার্থীরা।
এতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ফুল ও স্বারকলিপি হাতে নিয়েই প্রো-ভিসির কার্যালয় ঘেরাওয়ের চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা কলাপসিবল গেটে তালা দেয়ার জন্যে একে অপরকে উৎসাহ দিয়ে নানা স্লোগান দেয়। এসময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কন্ট্রোলার এনামুল হক করিম এগীয়ে এসে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে স্বারকলিপি গ্রহণ করেন। তবে তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন ‘কিছু বিষয় আছে এখানে ক্যামেরার সামনে প্রকাশ করতে পারছিনা বোঝে নিও তোমরা, পার্সোনাল্লি অফিসে এসো বলবো।
এর আগে শিক্ষার্থীদের সম্মূখে এসে তাদের নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাসুদ রানা। তবে তাতে কোন সুরাহা না পেয়ে শিক্ষার্থীরা প্রো-ভিসির সাথে সাক্ষাতে তাদের সমস্যা তুলে ধরার অনুরোধ জানালেও অনুমতি মেলেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।
পরে বিকেল সারে ৪টায় প্রো-ভিসি প্রফেসর ডক্টর নূরুল ইসলামের দেয়া আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা। তবে প্রো-ভিসির দেয়া আশ্বাসের বরাতে শিক্ষার্থীরা জানান চলতি মাসে তাদের দাবী পূরণ না হলে ফের তারা কঠোর আন্দোলনে নামবেন। তবে এসময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের যৌক্তিক দাবী ক্ষতিয়ে দেখার আশ্বাস প্রদান করেন।
তাদের দাবীগুলো হলো, ২০২২ সালের ১৮-১৯ সেশনের ২০২৪ অনার্স চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষায় ফলাফলে অনিয়মে বিপর্যস্ত পলাফলের ফাঁদে যে সকল শিক্ষার্থী এক বা তার অধিক বিষয়ে আটকে রয়েছে তাদের পুনঃমূল্যায়নের ফলাফল বিশেষ বিবেচনায় আগামী ১৫ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রদান করা।
১৮-১৯ সেশনের পূর্ববর্তী যে সকল শিক্ষার্থীরা এক বা তার অধিক বিষয়ে ফলাফলে অকৃতকার্য হয়েছে তাদের মাস্টার্স নিয়মিত অধ্যয়ন-সহ চলতি বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান সকল কোর্সে অংশগ্রহণ এবং এ বছর সরকারি সকল চাকরি ও বিসিএস নিবন্ধন বিবেচনায় পলাফল সমাধান করন।
করোনাকালীন সময়-সহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারনে (১৮-১৯) শিক্ষাবর্ষ ও তার পূর্ববর্তী শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা উচ্চ, দীর্ঘ সেশন জটে আটকে আছে তা দ্রুত সমাধান করা, প্রয়োজনে বিশেষ মূল্যায়ন পরীক্ষা ভাইবা কিংবা লিখিত পরীক্ষা নেয়ার ব্যাবস্থা করা।
১৮-১৯সেশন এবং এর পূর্ববর্তী সকল সেশনের এক দুই বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে যারা পূনঃর্মূলায়নের আবেদন করেছে তাদের কৃতকার্য করা, আর যারা বছরের পর বছর অকৃতকার্য হচ্ছে তাদের দূর্বলতার জায়গা অধ্যক্ষের স্থান থেকে ডিসি, বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত অবগত করা।
যেসকল শিক্ষকদের দায়িত্বে অবহেলার জন্য বছরের পর বছর শীক্ষার্থীদের জীবণ বিপন্ন হচ্ছে, তাদের পরিচয় জনসম্মূখে প্রকাশ করা। ওই সকল শিক্ষকদের শাস্তি দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। তারা স্বারকলিপিতে উল্লেখ করেন আমরা কোন আশ্বস্ততার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবো না। আমাদের দাবি মানা না হলে সকল সেশনকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কঠোর আন্দোলন হুঁশিয়ারি আবারও ব্যাক্ত করছি।
Discussion about this post