নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী সরকারের পতনের পর সারাদেশে আইন শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা অবনতি নিয়ে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছিলো। আস্তে আস্তে সে পরিস্থিতি উন্নতির দিকে অগ্রসর হলেও স্বাভাবিক হয়নি গাজীপুর জেলার গাছা থানার এরিয়ার ট্রাফিক ব্যবস্থা। ট্রাফিক বিভাগ নিরব অবস্থানের কারনে দূর্ঘটনায় মৃ’ত্যু সহ জনজীবনে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিন অনুসন্ধান করে দেখা যায়, মহানগরীর গাছা থানাধীন এলাকায় ঢাকা ময়মনসিংহ রোডে প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ঘটেই চলছে। বোর্ড বাজার, বড়বাড়ি, তারগাছ, সাইনবোর্ড, হারিকেন, মালেকের বাড়িসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট গুলোতে রাস্তা পারাপারে সুনির্দিষ্ট ট্রাফিক সিগনাল, ট্রাফিক সহযোহিতা, হাইওয়ে রোডের দুইপাশে ভ্রাম্যমান হকার, বেপরোয়া অটোরিক্সা, ওভার ব্রীজ না থাকায় দূর্ঘটনার মুল কারণ হিসেবে দেখছেন সাধারণ মানুষ। বেপরোয়া গতিতে তিন মূখী গাড়ি চলাচলের কারণে গত চার মাসে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন দশ থেকে বারো জন। পুঙ্গত্ব বরণসহ গুরুত্বর আঘাত প্রাপ্ত হয়েছেন প্রায় শতাধিক মানুষ।হাইওয়ে ছাড়া থানা এলাকার অন্যতম সড়ক গুলোতে দূর্ঘটনা ও জন ভুগান্তী আরো ভয়ানক আকার ধারণ করেছে। আগে রাস্তার ফুটপাত ভাড়া দিয়ে দৈনিক হারে ভাড়া আদায় করত ফ্যাসিস্ট সরকারের দুসররা। ৫ই আগস্টের পর সময়ের পরিবর্তনে সে সুযোগ সন্ধানি হয়েছেন রাস্তার পাশে থাকা কিছু অসাধু মার্কেট মালিকরা। মার্কেটের সামনের রাস্তায় ভ্যান গাড়িসহ বিভিন্ন হকার বসিয়ে দৈনিক ভাড়া আদায় করছেন দুইশত থেকে তিনশত টাকা করে।
গাছা থানা রোড বটতলা রোডে দুইপাশে ভ্যান গাড়ি ও ফুটপাত ভাড়া দিয়ে প্রতিদিন অসাধু মার্কেট মালিকগণ হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এতে চরম ভোগান্তি পরেছে চলাচল করা সাধারণ যাত্রী থেকে পরিবহন গুলো। রাস্তার দুইপাশে ভ্যান ও হকার, যত্রতত্র রিক্সা ও গাড়ি পার্কিং করে মালামাল আনলোড, দিনের বেলায় নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে রাস্তার বৃহৎ একটি অংশ দখল করে রাখাসহ বিভিন্ন সময়ে এ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসের মতো গাড়ি গুলো আটকে থাকতে দেখা যায়। ফুটপাত বেদখল হয়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে পথচারিদের চলাচল করতে হচ্ছে সড়ক দিয়ে। এতে প্রতিনিয়তই দূর্ঘটনায় আহত হচ্ছে বয়স্ক থেকে শিশু, মহিলা পথচারী।
বটতলা রোডে একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, কয়েক লাখ টাকা দিয়ে মার্কেটে দোকান নিয়েছি ব্যবসা করার জন্য। কিন্তু মার্কেট মালিকরা মার্কেটের প্রবেশপথে সরকারি রাস্তায় বিশাল আকৃতির ভ্যান গাড়ি বসিয়ে দৈনিক ভাড়া নিচ্ছে। সেই ভ্যানগাড়িতে মালামাল বিক্রেতা আবার সরকারি রাস্তার মাঝখানে টুল নিয়ে বসে রয়েছেন। পরিস্থিতি এমন হয়েছে আমরা যারা লাখ লাখ টাকা এডভান্স দিয়ে দোকান নিয়েছি আমাদের থেকে সরকারি রাস্তায় যারা ভ্যানগাড়ি বসিয়ে ভাড়া দেয় তাদের মূল্যায়ন বেশি। যার কারণে অনকে ব্যবসায়ী লসের কারনে দোকান ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। রাস্তা দখল করা ভ্যানগাড়ি ওয়ালাদের কিছু বললে মার্কেট মালিক স্থানীয় বা বহিরাগত লোক দিয়ে হেনস্তাসহ ভয়ভীতি দেখানো হয় বলে দাবি করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগি বলেন, আমার বাবা বাসায় হার্ড এ্যাটাক করলে তাকে হাসপাতালে নিতে গিয়ে বটতলা রোডে ভ্যানগাড়ি ও রিক্সার জন্য অনেক্ষণ আটকে থাকতে হয়েছে। বারবার অনুরোধ করেও রাস্তা না দেওয়ায় বাবাকে হাসপাতালে নিতে দেরি হওয়াতে বাবাকে বাচাতে পারিনি।
এ ব্যপারে গাছা থানার অফিসার ইনচার্জ আলী মোহাম্মাদ রাশেদ সংবাদ কর্মীদের বলেন, প্রতি নিয়ত অভিযান চলছে, সকাল ও বিকাল পুলিশ পাঠালে তারা গাড়ী নিয়ে দৌরে চলে যায়। পরবর্তীতে আবার বসে, থানায় ধরে আনলে গরীব মানুষ কান্নাকাটি করে, দোকান মালিক উভয় দিক থেকে রোড দখল করে প্রতিদিন ভাড়া উঠানোর বিষয় তিনি এড়িয়ে যান।
মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি ট্রাফিক বিভাগের প্রধান মোঃ আলমগীর হোসেন মোবাইল ফোনে ময়মনসিংহ ও ঢাকা রোডের ভ্যান দখলের বিষয়ে বলেন, আমাদের টিম সার্বক্ষণিক কাজ করছে ও মামলা নিচ্ছে এবং বি আর টি রোডের সম্পর্কে বলেন, এটা আমাদের বিষয় না? বি আর টির বিষয়, মাঝ লাইনে উভয় দিক থেকে গাড়ি আসা যাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, এটা বিআরটি দেখবে।
Discussion about this post