নিজেস্ব প্রতিবেদক: মা ও শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবি জানান তামাক বিরোধী মায়েদের ফোরাম।
বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল ১১ টায় রাজধানী কৃষিবিদ ইনষ্টিটিউট বাংলাদেশে নারী মৈত্রী আয়োজিত ‘‘তামাক বিরোধী মায়েদের ফোরাম‘’ গঠন বিষয়ক সভায় এ দাবি জানান তারা।
নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলির সভাপতিত্বে ১৫ জন বিশিষ্ট মা নিয়ে গঠিত তামাক বিরোধী মায়েদের ফোরাম এর আহ্বায়ক ছিলেন সাবেক এম পি এবং তামাক বিরোধী সংসদীয় নারী ফোরামের সাবেক সদস্য জনাব শিরিন নাঈম পূনম। সহ আহ্বায়ক ছিলেন সাবেক এমপি নার্গিস রহমান।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোস্তাফিজুর রহমান, লীড পলিসি এডভাইজর, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশ এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান,বিসিআইসি, বাংলাদেশ। অনুষ্ঠানে বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ আব্দুস সালাম মিয়া, প্রোগ্রাম ম্যানেজারস ,ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশ।
নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলি বলেন, তামাক নারী স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ধূমপান না করে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন তারা। এছাড়া পাবলিক প্লেস, গণ পরিবহণ, রেস্টুরেন্ট এবং ধূমপানের জন্য সকল নির্ধারিত স্থান বাতিলের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য মায়েদের ফোরামের কাছে আহ্বানে জানান তিনি।
তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ফোরামের সদস্যগণ যথাযথ ভূমিকা রাখবেন বলে মনে করেন ফোরাম এর আহ্বায়ক শিরিন নাঈম পূনম। তিনি বলেন, তামাকের কারনে প্রতিদিন ৪৪২ জন মানুষের প্রান ঝরছে। মৃত্যুর এই মিছিল ঠেকাতে এই ফোরাম তামাক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের দাবিতে নিরলস সমর্থন ও পরামর্শ দেবেন। পাশাপাশি নিজের পরিবারকে তামাকের প্রভাবমুক্ত রাখবেন এবং অন্যান্য মায়েদের সাথে এই বিষয়ে কথা বলবেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যাতে মন্ত্রীসভায় সংশোধিত আইনটি দ্রুত উত্থাপন করেন সে লক্ষ্যে সহযোগিতা করা এবং অনুমোদনের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জোরালো দাবী জানানোর জন্য ফোরাম কাজ করে যাবে।
এছাড়া তামাক দ্রব্যের উপর কার্যকর কর আরোপের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে জোর দাবী জানানো এবং তামাক কোম্পানীর কূটকৌশল বা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে বাধাগ্রস্ত করার বিরুদ্ধে সক্রিয় অবস্থান গ্রহন করবেন বলে আশ্বাস জানান তিনি।
ক্যাম্পেইন ফর ট্যোবাক ফ্রি কিডস বাংলাদেশ প্রোগ্রামস ম্যানেজার মো. আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, তামাকের প্রতি আসক্তি যুবসমাজকে ফেলে দিচ্ছে এক অন্ধকার জগতে। অল্প বয়সেই শিশু-কিশোররা ধূমপানে আসক্ত হয়ে পড়ছে। ভয়ঙ্কর শারীরিক অসুস্থতার মুখোমুখি হওয়ার পাশাপাশি মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে তারা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে বিভিন্ন দেশে ‘গ্লোবাল ইয়ুথ টোব্যাকো জরিপ’ শিরোনামে একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়। ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে পরিচালিত এ জরিপ প্রতিবেদনে ভারত, ইন্দোনেশিয়া এবং বাংলাদেশে ধূমপান আসক্ত কিশোর-কিশোরীর হার সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশে প্রায় ১২ শতাংশ কিশোর-কিশোরী নিয়মিত ধূমপানে আসক্ত।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পরোক্ষ ধূমপান নারীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। পরোক্ষ ধূমপানের কারনে নারীদের অকালে গর্ভপাত, অপরিণত শিশুর জন্ম, স্বল্প ওজনের শিশু, গর্ভকালীন রক্তক্ষরণ, প্রসবের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, মৃত শিশুর জন্ম দেয়াসহ নানা সমস্যা দেখা দেয়। গ্লোবাল এডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে ২০১৭ তথ্য মতে, ধুমপান না করওে পরোক্ষভাবে ধূমপানরে শকিার হয় ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ। যার মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে নারী ও শিশু। তাই আমার দৃঢ় বিশ্বাস “তামাক বিরোধী মায়েদের ফোরাম” ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে তামাকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাসের দাবিতে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন
এছড়াও ফোরামের অন্যান্য সদস্যগণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী প্রস্তাব দ্রুত পাশের জোর দাবি জানান।
Discussion about this post