নিজস্ব প্রতিবেদক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার জেরে গাজীপুর-৫ (কালীগঞ্জ,পুবাইল ও বাড়িয়া) আসনে নৌকা প্রতীকের পরাজয়ের পর কর্মী সমর্থকদের মারপিট, অগ্নিসংযোগ, লুটপাত, চাঁদা দাবি, অফিস ও বাড়িঘর ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আর এসব ঘটনায় ভুক্তভোগীরা কান্নায় বিজড়িত কন্ঠে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপির নিকট বলেন, আমাদেরকে বাঁচান। নৌকা করাটাই কি আমাদের অপরাধ! নৌকার নির্বাচন করায় সদ্য বিজয়ী হওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতার উজ্জামানের নেতা কর্মীরা আমাদেরকে তো মারপিট করছেই এমনকি বাড়িতে নারীরা নিরাপদে নেই, তাদেরকেও মারধরসহ নানা ধরনের হয়রানী করছে। সদ্য বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী বাহিনীর দাপটে নৌকার প্রার্থী সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির কর্মী সমর্থকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী নৌকার কর্মী পিয়াস এর মা শারমিন জানান, বাড়িতে আমার ছেলেকে না পেয়ে ঘরে ঢুকে আমাকে বেধরক মারধর করে হাত ভেঙে দিয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীরা, ইউনিয়ন তাঁতী লীগের সহসভাপতি শরীফ হোসেন, মোক্তার ফকির মারধরসহ, আউয়াল সরকারের পোল্ট্রি ফার্ম ঘরসহ আগুন লাগিয়ে জালিয়ে দেয়, আলাউদ্দিন শেখকে মারধর করে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করারও অভিযোগ উঠে তাদের বিরুদ্ধে।
এ সময় তাদের হামলায় শিকার হয়েছেন ফয়সাল ট্রেডাসের মালিক মোঃ জুয়েল শেখ, জাঙ্গালীয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান, সুলতান মাষ্টার, মোস্তফা, রাসেল, হাবিবুর রহমান, সিজান বেপারী ও স্বজল শেখ।
এদের মধ্যে শরীফ হোসেন, আলাউদ্দিন, মোঃ জুয়েল শেখ, সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান,শারমিন আক্তার গুরুতর আহত হন।
সহিংসতায় নৌকা প্রতীকের সর্মথক মোঃ জুয়েল শেখ জানান, নৌকার নির্বাচন করাটাই কি আমার অপরাধ! স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক প্রতীকের কর্মীরা রাথুরা বাজারে আমার রড সিমেন্টের দোকানে ঢুকে দোকানের সাটার বন্ধ করে ১০(দশ) লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে বলে তুই নৌকার লোক বাঁচতে চাইলে টাকা দে নইলে এলাকা ছাড়। এ কথা বলেই তারা আমাকে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং ক্যাশে থাকা নগদ ৯০ হাজার টাকা নিয়ে যায় ওই দুষ্কৃতিকারীরা। পরে স্থানীয়রা তাকে আহতবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান জানান, আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে জাঙ্গালীয়া মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে রাথুরা বাজারে পৌছলে পূর্ব থেকে উৎ পেতে থাকা স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক প্রতীকের কর্মীরা আমার মোটরসাইকেলের গতি রোদ করে এলোপাতাড়ি মারধর করে আমাকে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা আমাকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় মহিলা আ’লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গাজীপুর -৫ আসনের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ভুক্তভোগীদের কথা শুনেছি। পুলিশ প্রমাসনকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি। তবে এরম নাক্কাজনক ঘটনার জন্য তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই।
কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহতাব উদ্দিন এই প্রতিবেদকে বলেন, নির্বাচনে পর মোক্তারপুর ইউনিয়ন এলাকায় সহিংসতার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Discussion about this post