নিজস্ব প্রতিবেদক: গাজীপুর মহানগরীর সদর মেট্রো থানাধীন ১৯নং ওয়ার্ডের নাগা এলাকায় ৭০বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে প্রকাশ্যে দা দিয়ে কুপিয়ে রুক্তাক্ত জখম করেছে তার শ্যালক ও শ্যালকের ছেলে। প্রকাশ্যে কোপানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এসময় ঐ বৃদ্ধের স্বজনের কান্নাকাটি করলেও তাকে ছাড়েনি পাষন্ডরা। পরে গুরুতর আহত বৃদ্ধকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
গত রোববার ২৪ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৫টায় এ ঘটনা ঘটে। আহত বৃদ্ধ, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নাগা এলাকার ওমেদ আলী (৬৫)। জমিতে গরু প্রবেশে নিষেধ করার কারনে তাকে দা দিয়ে কোপানো হয়। ঘটনার পর বৃদ্ধের মেয়ে ওহেদা খাতুন বাদি হয়ে গাজীপুর মহানগর সদর মেট্রো থানায় বৃদ্ধের শ্যালক সাহিদ, তার স্ত্রী রেবেকা ও তার ছেলে সাদ্দাম হোসেনের নামে মামলা দায়ের করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, একটি পতিত জমিতে বৃদ্ধ ওমেদ আলীকে মাটিতে ফেলে শ্যালক সাদিক আঘাত করছে এবং তার ছেলে সাদ্দাম ধারালো দা দিয়ে এলোপাথারি কোপাচ্ছে।এ সময় সেখানে উপস্থিত কয়েকজন নারী চিৎকার করছেন, সাহায্যের জন্য চিৎকারে আশপাশের কেউ বাধা দিতে বা সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি।
বৃদ্ধার মেয়ে ওহিদা খাতুন বলেন, আমার বাবা বাড়ি সংলগ্ন মসজিদের পাশেই ছোট ঘর তুলে থাকে। মসজিদের আশপাশে বেঁড়া সীমানা ও বিভিন্ন সবজি গাছ লাগিয়ে আমার বাবা সংসার পরিচালনা করেন। বিভিন্ন সময় আমার মামার গরু শাক সবজি ও বিভিন্ন ধরণের লাগানো গাছপালা খেয়ে ফেলে। এনিয়ে বাবা বিভিন্ন সময় সতর্ক করেছিল। মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা ও গাছ পালা রক্ষার জন্য তার মামাকে বার বার সতর্ক করার পরও সে (মামা) শুনেননি। বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে বিতর্ক হলে মামা বাড়ি চলে যায়। পরে বাবা মসজিদের পাশে বাঁশ দিয়ে বেঁড়া নির্মাণের কাজ করছিল। বিষয়টি নিয়ে মামার বাড়িতে আলোচনা হয়। পরে আবার ফিরে এসে মামা সাহিদ ও মামাতো ভাই সাদ্দাম হোসেন বাঁশ ও কাঠের শক্ত লাঠি দিয়ে পেটানো শুরু করে। বাঁশ ও কাঠের লাঠি ভেঙ্গে গেলে বাবার কাজ করা দা নিয়ে তাকে এলোপাথারি কোপায়। পরে আমরা গিয়ে দ্রুত গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। তিনি আরও বলেন, কোপানোর ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ওরা নিজেরাই তাদের হাত কেটে সাহিদ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এখন পুলিশ পাহারায় রয়েছে। এঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলার আসামি সাহিদ নিজেও হামলার শিকার হয়েছেন, এমন ঘটনা সাজাতে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তাকে রিলিজ করে দেয়া হয়। তিনি দাবী করেন, আমাকেও বৃদ্ধ পিটিয়েছ, আমার স্ত্রীকেও মারধর করেছে। পরে আমার ছেলে রেগে গিয়ে তার উপর আক্রমণ করেছে।
এ ব্যাপারে গাজীপুর সদর মেট্রো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ রাফিউর রহমান বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। ভিডিওটি দেখেছি। আমারই ভয় লেগেছিল। হাসপাতালে আহত বৃদ্ধ ওমেদ আলীকে দেখেছি। মামলার আসামি সাহিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
Discussion about this post