নিজস্ব প্রতিবেদক: গাজীপুরের কাপাসিয়ায় রাজনৈতিক মামলায় শামসুল হুদা লিটন নামে এক সাংবাদিক ও কলেজ শিক্ষককে গ্রেফতার দেখিয়েছে কাপাসিয়া থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।শামসুল হুদা লিটন কাপাসিয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের (জেইউজি) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তিনি দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার কাপাসিয়া প্রতিনিধি এবং উপজেলার তারাগঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক।
মিথ্যা মামলায় তাকে গ্রেফতারের ঘটনায় স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক ফেসবুকে নিন্দার ঝড় তুলেন। একইসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুক্তি দাবি করেন। এছাড়া জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন সাংবাদিক ও পেশাজীবী সংগঠনের পক্ষ থেকে বিবৃতি প্রদান করা হয়। গ্রেফতার লিটনের স্ত্রী মোসলেমা খাতুন যুগান্তরকে জানান, বুধবার বিকাল ৩টায় বাড়ির উদ্দেশে কলেজ থেকে বের হলে কাপাসিয়া থানার সাদা পোশাকধারী একদল পুলিশ কোনো মামলা বা গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই লিটককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।তিনি বলেন, লিটন কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত নন, তা সত্ত্বেও তাকে একটি রাজনৈতিক মামলায় নাম না থাকলেও ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
এ ব্যাপারে কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবু বকর মিয়া বলেন,গত অক্টোবরে জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে কাপাসিয়া থানায় দায়েরকৃত একটি মামলার তদন্তে লিটনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। ফলে ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে সাংবাদিক লিটন আলোচিত মামলার এজাহার নামীয় আসামি নন বলে তিনি স্বীকার করেন।পুলিশ বাদী হয়ে দায়ের করা ওই মামলার আরজিতে বলা হয়, গত ৫ অক্টোবর রাত ৮টায় বড়হড় পূর্বপাড়া ঈদগাঁ মাঠের সামনে জামায়াত-শিবিরের কতিপয় লোকজন রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করা, জনমনে ভয়ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে বর্তমান সরকার বিরোধী কার্যকলাপসহ ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করার জন্য একত্রে মিলিত হয়ে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটানোর গোপন পরিকল্পনা করছে- এমন সংবাদ পেয়ে সেখানে অভিযান পরিচালনাকালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা পালিয়ে যায়।
এদিকে সাংবাদিক লিটনকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন বিএফইউজে সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, মহাসচিব নূরুল আমিন রোকন, সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহবায়ক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, গাজীপুর প্রেস ক্লাব সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, সম্পাদক শাহ শামসুল হক রিপন, সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের (জেইউজে) সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন, সম্পাদক মো. হেদায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ গাজীপুরের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, সম্পাদক ডা. আসাদুজ্জামান আকাশ, কাপাসিয়া প্রেস ক্লাব সভাপতি সঞ্জিব রায়সহ গাজীপুরের বিভিন্ন উপজেলার সাংবাদিক নেতারা। সাংবাদিক নেতারা রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় একজন পেশাদার সাংবাদিককে গ্রেফতার দেখানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করে অবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
Discussion about this post