নিজস্ব প্রতিবেদক: ডাক্তার হায়দার সাধারণ মানুষের কাছে অপরিচিত হলেও গাজীপুরস্থ হাসপাতাল মালিকদের কাছে অজ্ঞানের ডাক্তার হিসেবে বেশ সুপরিচিত। অপারেশনে রোগীকে অজ্ঞান করার দায়িত্ব পালন করার মধ্য দিয়ে চিকিৎসা খাতে বেশ আলোচিত এবং সমালোচিত অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট খ্যাত এই ডাক্তার।
সম্প্রতি গাজীপুর নগরীর চান্দনা চৌরাস্তাস্থ ডিজিটাল হাসপাতাল নামক প্রতিষ্ঠানে একটি শিশুর টনসিল অপারেশনে অ্যানেস্থেসিয়ার দায়িত্ব পালন করাকালে শিশুটির আর জ্ঞান না ফেরার মধ্য দিয়ে মৃ’ত্যু হয় এমন অভিযোগ ওঠে এই ডাক্তারের বিরুদ্ধে! সে সময়ে রোগীর আত্মীয় সজনরা ঐ হাসপাতালে ভাং’চুরও করেন, পরে পুলিশ এসে ঘটনা নিয়ন্ত্রণে এনেছিলেন। যদিও পরবর্তীতে রোগীর আত্মীয় সজনরা অদৃশ্য কারণে চুপসে যায়!
এই শিশু মৃ’ত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে ডা. হায়দার সম্পর্কে নতুন করে নানা প্রশ্ন জন্ম হয় জনসাধারণের মনে। তৈরি হয় নান কৌতুহল। কে এই ডাক্তার, কেথায় লেখাপড়া করেছেন তিনি, তার কি আদৌ অ্যানেস্থেসিওলজির উপরে পড়ালেখা বা ডিগ্রি আছে; এসকল নানা প্রশ্ন নিয়ে আমরা তার সাথে যোগাযোগ করলে আমাদেরকে প্রকৃত তথ্য না দিয়ে তিনি শুধু বলেছেন, তার অ্যানেস্থেসিওলজির উপরে শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ থেকে ট্রেনিং করা আছে।
ডিজিটাল হাসপাতালের মালিক মো. মতিউর জানান, ‘আমরাতো জানি ডা. হায়দার শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিয়া ডাক্তার তাই শুধু আমরা না গাজীপুরের অনেক হাসপাতালেই তাকে বিভিন্ন অপারেশনে অজ্ঞানের ডাক্তার হিসেবে নিয়ে আসে।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের অ্যানেস্থেসিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ ফখরুদ্দিন আহমেদ জানান, ‘ডা. হায়দার আমাদের এখান থেকে একটা ট্রেনিং করেছেন কোনো ডিগ্রি নয় আর আমরা সাধারণত অ্যানেস্থেসিওলজিরি উপরে ডিগ্রি করা ছাড়া কাউকে প্র্যাকটিস করতে বলিনা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমদের দেশে অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট এর সল্পতা থাকার কারণে অনেকেই একটি সর্ট কোর্স ট্রেনিং করেই বিভিন্ন অপারেশনে প্র্যাকটিস করা শুরু করে দেয়, যা ঠিক নয়।
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. মুহাম্মদ শাহীন জানান, ‘ডা. হায়দার আমাদের এখান থেকে যে ট্রেনিংটি করেছেন সেটা কখনই প্র্যাকটিসে অংশগ্রহণের অনুমতি প্রদান করে না বরং এই ট্রেনিংটি অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট ডিগ্রি সংক্রান্ত কোর্সে ভর্তি হতে সহায়ক মাত্র।
নাম প্রকাশ না করার ইচ্ছায় একজন অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট জানান, শিশুদের অপারেশনের ক্ষেত্রে অ্যানেস্থেসিয়া অত্যন্ত জটিল একটি ব্যাপার একজন পারদর্শী অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট ছাড়া এই অপারেশন না করাই ভালো। যারা যথাযথ ডিগ্রি ছাড়া এধরণের অপারেশনে অংশ নেয় তাদের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কঠোর মনিটরিং থাকা দরকার আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আরও সচেতন হতে হবে ডাক্তার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে।
গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. খায়রুজ্জামান জানান, ‘বিষয়টি ইতো মধ্যে আমাদের নজরে এসেছে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
Discussion about this post