নিজস্ব প্রতিবেদক: কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় সাত বছর বয়সী এক কন্যা শিশু’কে ধর্ষ’ণের মামলায় এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন (৪৫) নামের ওই ব্যক্তি নিজেকে ‘পীর’ ইকবাল হোসাইন শাহ সুন্নি আল কাদেরী বলে পরিচয় দিতেন। তিনি মাওলানা প্রফেসর ইকবাল নামেও পরিচিত।
মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন নিজেকে কুমিল্লার চান্দিনার তথাকথিত একজন পীরের মুরিদ এবং স্বনামধন্য একটি দরবার শরিফের অনুসারী ও প্রতিনিধি হিসেবে দাবি করে আসছিলেন। কিন্তু, ধর্মীয় বিষয়ে তার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। সে শুদ্ধভাবে আরবি পড়তে পারে না। বিভিন্ন ইসলামী বই পড়ে ও মোবাইল ফোনে ওয়াজ শুনে কিছু ধর্মীয় বিষয় মুখস্ত করে সপ্তাহে এক দিন নিজ আস্তানায় জমজমাট আসর বসাতো। নিজ আস্তানার বাইরেও বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতো সে।
সোমবার (১৯ জুন) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন সংস্থাটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। গত ২ জুন সাত বছরের এক শিশুকে নিজ আস্তানায় নিয়ে ধর্ষণ’ করে কথিত ওই পীর। লিচু দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ওই শিশুকে আস্তানায় নেওয়া হয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে ইকবাল হোসেনের কিছু সহযোগী বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ভুক্তভোগীর পরিবারকে চাপ দেয়। এ ঘটনায় ৬ জুন ভুক্তভোগী শিশুর মা বাদী হয়ে দেবিদ্বার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। রোববার (১৮ জুন) রাতে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইকবাল হোসাইনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১১।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষ’ণের কথা স্বীকার করেছে ইকবাল। জিজ্ঞাসাবাদে কথিত ওই পীর জানিয়েছে, গত ২ জুন দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে ইকবালের বাড়ির পাশের মাঠে খেলতে যায় সেই শিশু। তাকে লিচু দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আস্তানায় ডেকে নিয়ে কৌশলে ধর্ষণ’ করে ইকবাল। শিশুটি সেখান থেকে পালিয়ে বাড়িতে এলে তার মা তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। মামলার পর ইকবাল আস্তানা থেকে পালিয়ে যায়।
র্যাবের ওই কর্মকর্তা বলেন, ইকবালের আস্তানায় লোকজন মাদকসেবনসহ বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপ করত। ইকবাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের এবং আস্তানার নামে আইডি ও পেজ খুলে আস্তানার প্রচার চালিয়ে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করত। এর আগেও সে কয়েকবার অসামাজিক কার্যক্রমে লিপ্ত হওয়ার স্থানীয় লোকদের কাছে ধরা পড়েছিল। পরে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে অঙ্গীকারনামা দিয়ে ছাড়া পায় ইকবাল। ভক্তরা হাদিয়া হিসেবে টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও গবাদি পশু দিতো৷ এগুলো আস্তানার জন্য ব্যয় করা হতো।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ইকবাল কুমিল্লার একটি কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে। বিভিন্ন কলেজে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকতা করত সে। এজন্য স্থানীয় লোকজন তাকে প্রসেফর বলে ডাকত। স্থায়ী কোনো চাকরি না পেয়ে সহজে টাকা উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে নিজেকে ‘পীর’ দাবি করে ইকবাল। পীরের লেবাস ধারণ এবং নামের শেষে শাহ সুন্নি আল কাদেরী উপাধি যুক্ত করে সে।
ধর্ষ’ণের পর প্রথমে কক্সবাজার ও পরে নারায়ণগঞ্জে আত্মগোপন করেছিল ইকবাল। সর্বশেষ রাজধানীর মিরপুরে পরিচিত এক ব্যক্তির বাসায় আত্মগোপনে ছিল সে। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার
Discussion about this post